চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল কীভাবে তৈরি করা হবে সে সংক্রান্ত নির্দেশনা পাওয়া গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল তৈরির কাজ শেষ করা হবে। এরপর অক্টোবরের মাঝামাঝি ফল প্রকাশ করা হবে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জানান আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড সাব কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
কবে নাগাদ এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার আরও বলেন, দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে শিগগিরই একটি প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় যে দিন চূড়ান্ত করবেন সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে।
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১২ থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে ফল প্রকাশের প্রস্তাব তৈরি করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে। আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের সভায় এ সংক্রান্ত তারিখ নির্ধারণ করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে একটি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা শিগগিরই সভায় বসবো। সভায় প্রাথমিকভাবে তিনটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এরপর সেটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় যে তারিখ চূড়ান্ত করবে সেই দিন ফল প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমানের যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়নি সেগুলোর ফল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী দেওয়া হবে। আর যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছে সেগুলো পূর্ণ মান অনুযায়ী ফল তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম দফায় প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
সবশেষ নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় গত ১১ আগস্ট। এর মধ্যে পরীক্ষার্থীরা স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ আগস্ট সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে বিক্ষোভ করেন তারা। পরবর্তী সময়ে এসব পরীক্ষা বাতিল করা হয়।
এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল জুন মাসের ৩০ তারিখে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা ঠিকঠাকভাবেই সম্পন্ন হয়। কিন্তু কোটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা এবং পরে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনা সরকার।
সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে বাকি পরীক্ষাগুলোর তারিখ বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। সবশেষ নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১১ আগস্ট। এর মধ্যে পরীক্ষার্থীরা স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ আগস্ট সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরবর্তীতে এসব পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা প্রশাসন।
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের অধীনে মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন অংশগ্রহণ করেন।