মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ২০২৪ | Learn Freelancing with Mobile

Avatar

Published on:

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ২০২৪ | Learn Freelancing with Mobile

আপনি যদি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চান এবং এ বিষয়ে জ্ঞানশূন্য হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই ব্লগটি আপনার জন্যই। এই ব্লগে আমরা ফ্রিল্যান্সিং মানে কি এবং ফ্রিল্যান্সিং কাজসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ফ্রিল্যান্সিং মানে কি?

ইংরেজি Freelancing শব্দের বাংলা অর্থ হলো মুক্তপেশা। একটু বিস্তারিত বলতে গেলে, ধরাবাধা কোনো সময় বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ না করে নিজের সময়, সুযোগ অনুযায়ী কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে।

আপনি যদি চাকুরি করেন তাহলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আপনাকে টানা ৮ ঘন্টা কাজ করতে হবে। আর মাসের ৩০টা দিন, বছরের ৩৬৫টা দিন একই কাজ করতে হবে। সাপ্তাহিক ছুটি, সরকারি ছুটি ও অন্যান্য বিশেষ ছুটি ছাড়া আপনাকে নিয়মিত কাজ করতে হবে।

অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্তভাবে কাজ করা। আপনি চাইলে এক সপ্তাহে টানা ৭ দিন কাজ করতে পারেন। আবার চাইলে টানা ৭ দিন ছুটি কাটাতে পারেন। আপনি কাজ করবেন কি করবেন না সেটা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছার উপরে নির্ভর করবে।

তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে খুব সাধারণ একটা অসুবিধা রয়েছে। সেটি হলো এখানে আপনার একাধিক বস থাকতে পারে। চাকুরির ক্ষেত্রে যেমন শুধু একজন বসের নির্দেশনা মানতে হয়, ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে সে সুযোগটি নেই।

যেহেতু আপনি একাধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন সেহেতু এখানে একাধিক বস বা বায়ার থাকবে। এটা অনেক সময় কাজের শিডিউল তৈরিতে ঝামেলা তৈরি করে।

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য কি?

অনেকেই মনে করেন Freelancing ও Outsourcing দুইটা একই বিষয়। কিন্তু আসল কথা হলো এই দুইটা একে অপরের সাথে জড়িত হলেও আসলে ভিন্ন বিষয়।

এই দুইটা শব্দের মধ্যে একটা সুক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। আপনি যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য মুক্ত-পেশাজীবী হিসেবে কাজ করবেন তখন সেটাকে আপনি বলবেন ফ্রিল্যান্সিং। আর যে প্রতিষ্ঠান আপনাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেবে সে এটাকে বলবে আউটসোর্সিং।

আউটসোর্সিং বলতে মূলত প্রতিষ্ঠান বা দেশের বাইরের কর্মী দ্বারা কোনো কাজ করিয়ে নেওয়া। যখন কেউ কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সার Hire করে তখন সে মূলত কাজটা আউটসোর্স করে।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি?

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো তা জানার আগে চলুন জেনে নিই এই কাজটা কত ধরনের হতে পারে।

অনেক ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে। প্রযুক্তি উন্নয়ন ও ব্যবসায়-বাণিজ্য প্রসারের সাথে সাথে এই ধরনের কাজ সংখ্যাও বাড়ছে। যেমন আগে যখন এআই ছিল না তখন কেউ AI Expert/Operator খুঁজতো না। কিন্তু এখন এআই জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে এবং বাজারে এই ধরনের কাজে দক্ষ ব্যক্তির চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে।

নির্দিষ্টভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজের কোনো প্রকারভেদ নেই। নিচে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজসমূহের তালিকা দেওয়া হলো।

  1. ওয়েবসাইট ডিজাইন
  2. ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট
  3. মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
  4. গ্রাফিক্স ডিজাইন
  5. ভিডিও এডিটিং
  6. কন্টেন্ট রাইটিং
  7. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
  8. ডাটা এন্ট্রি
  9. ডাটা এনালিসিস
  10. সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন
  11. ডিজিটাল মার্কেটিং
  12. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট

এর বাইরেও আরো বহু ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে। সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় কিছু কাজের তালিকা দিয়েছি এখানে।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?

এতক্ষণ Freelancing বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জেনেছি। এবার আসুন জেনে নিই নতুনরা কিভাবে শুরু করবেন। আপনাদের বহুল জিজ্ঞাসিত "ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো" প্রশ্নের উত্তর দেব ব্লগের এই অংশে।

ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং শিখে আয় করতে চাইলে আপনাকে বেশ কৌশলী হতে হবে এবং পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। এখন আপনাদের কয়েক ধাপে ফ্রিল্যান্সিং জার্নি শুরু করার পরামর্শ দিব। আপনি যদি এই গাইডলাইন ফলো করেন তাহলে আপনার জার্নিটা অনেক সুন্দর হবে, আশা করছি।

যেভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেনঃ

  1. কাজের সেক্টর নির্বাচন করুন
  2. কাজ শিখুন
  3. মেন্টর খুঁজে বের করুন
  4. ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট তৈরি করুন
  5. কাজ খুঁজে বের করুন

এই উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং শেখার জার্নিটা অনেক মশ্রিণ হবে। আপনি এ বিষয়ে যেন আরো বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারেন সেজন্য নিচে প্রতিটা ধাপ নিয়ে আলাদা আলোচনা করছি।

১. কাজের সেক্টর নির্বাচন করুন

উপরে কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজের তালিকা দিয়েছি। এর বাইরেও আরো অনেক ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে প্রথমেই আপনাকে যে সিদ্ধান্তটি নিতে হবে তা হলো আপনি কোন সেক্টরে কাজ করতে চান।

আপনার সে বিষয়ে আগ্রহ, ভালো জানাশোনা আছে সেটি কাজের বিষয় হিসেবে নির্বাচন করা উচিত। আবার এমন কোনো সেক্টর নির্বাচন করা উচিত না যেটাতে আপনার ভীষণ আগ্রহ আছে কিন্তু বাজারে সেটার চাহিদা নেই।

আপনার আগ্রহ, বাজারে চাহিদা, লং-টার্ম সাপোর্ট এসব বিষয়ে সমন্বয় রেখে তবেই কাজের সেক্টর নির্বাচন করা উচিত।

কেউ যদি লিখতে ভালোবাসে তাহলে কন্টেন্ট রাইটিং, কেউ যদি আঁকিবুঁকি পছন্দ করে তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন বা অ্যানিমেশন ইত্যাদি।

এখন যেহেতু এআই এর সূচনালগ্ন তাই এমন কাজ নির্বাচন করবেন যেটা এআই দ্বারা সম্পূর্ণভাবে রিপ্লেস করা সম্ভব না।

২. কাজ শিখুন

এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা ধাপ। আপনি যে কাজে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান আগে সেটা শিখতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে এমন একটা বিষয় যেখানে স্বজনপ্রীতি, একাডেমিক পারফরম্যান্স ইত্যাদি কোনো কাজেই আসে না। আপনি কতটুকু কাজ জানেন সেটার উপরেই নির্ভর করে আপনার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।

ফ্রিল্যান্সিং শেখার অনেক উপায় আছে। বাংলাদেশে এমন অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং ট্রেইনিং দিয়ে থাকে। সেসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেন।

এছাড়া অনলাইনে কোর্স কিংবা ইউটিউবের ফ্রি ভিডিয়ো রিসোর্স ব্যবহার করেও ফ্রিল্যান্সিং শেখা যায়। ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায়গুলো নিয়ে আমরা পরে আরো বিস্তারিত কথা বলবো।

৩. মেন্টর নির্বাচন করা

যেকোনো কাজ শেখার জন্য একজন মেন্টরের ভীষণ প্রয়োজন। তিনি আপনাকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন। এই মুক্ত-পেশায় থাকতে হলেও একজন মেন্টরের প্রয়োজন।

এমন কাউকে মেন্টর হিসেবে নির্বাচন করাআ উচিত যিনি আপনার কাছের মানুষ। প্রাসঙ্গিক কোনো সমস্যায় পড়লে যার কাছে দৌড়ে সাহায্য নেওয়া যাবে তাকেই মেন্টর করুন। ইন্টারনেটে এমন অনেক সেলিব্রেটি আছে যারা প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছে, তাদেরকে মেন্টর করবেন না।

কেননা তারা আপনাকে চেনে না এবং আপনি যদি কোনো সহযোগিতার জন্য যদি তাদেরকে মেসেজ বা কল দেন তারা আপনাকে সাড়া দেবে না। তাই শুধু সফলতা বা ইনকাম দেখে মেন্টর পছন্দ না করে, যে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে তাকে মেন্টর বানান।

৪. ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট তৈরি করুন

এপর্যায়ে এক বা একাধিক ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট তৈরি করার পরামর্শ দেব। শুধু একটা সাইটের চেয়ে একাধিক সাইটে একাউন্ট খোলার যে সুবিধা তা হলো- অনেক বেশি কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা।

তবে এখানে আমাদের বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান অঞ্চলের মানুষজন একটা ভুল করে। তারা যথাযথভাবে কাজ না শিখেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলে বায়ারদেরকে মেসেজ দেয়। এতে এই অঞ্চলের ফ্রিল্যান্সারদের উপরে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে উন্নত দেশের বায়ারদের কাছে। এটা একটা বড়-সড় ভুল আমাদের তথাকথিত ফ্রিল্যান্সারদের।

আপনাদেরকে অনুরোধ করবো, দয়া করে এই ভুলটি আপনারা করবেন না। এটা করলে আমাদের-আপনাদেরই সুনাম ক্ষুন্ন হবে। কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো সে বিষ এইয়ে ব্লগের শেষের অংশে আলোচনা করেছি।

৫. কাজ খুঁজে বের করুন

যথাযথভাবে কাজ শেখা হয়ে গেলে এবং এবং মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খোলা হলে পরবর্তী কাজ হলো এসব সাইটে Bid, Gig, Offer তৈরি করা। এছাড়া বায়াররা যেসব অফার দেয় সেগুলোতে আবেদন করা।

প্রথম পর্যায়ে হয়তো আপনি ১০০টা অফারে আবেদন করলে ১টা রেসপন্স পাবেন কিন্তু ২-৩টা কাজ সম্পন্ন করতে পারলে এরপর থেকে আর কাজ খোঁজা কষ্টকর মনে হবে না। আরো বেশি কাজ পেতে ফেসবুক ও লিংকডিনে চোখ রাখতে পারেন। সেখান থেকেও অনেক লং-টার্ম প্রজেক্টে কাজ পাওয়া যায়।

ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো?

আপনি যদি মনস্থির করেন যে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন এবং তা থেকে আয় করবেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য রিসোর্সের অভাব হবে না।

কারণ এখন এই ফ্রিল্যান্সিং পেশাটা এত বেশি জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে যে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দেশে শ' খানেক প্রতিষ্ঠান, ইউটিউব চ্যানেল, ব্লফ রয়েছে।

এছাড়া আরো বিদেশি প্ল্যাটফর্ম তো রয়েছে। কিন্তু এত এত প্ল্যাটফর্ম থাকাটাও একটা সমস্যা। আমরা যারা এই বিষয়ে নতুন তারা বুঝতে পারি না যে ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো।

যেহেতু আপনি নতুন এবং মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো সে বিষয়ে আপনাকে গাইড করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে ব্লগটি শুরু করেছিলাম সেহেতু এখন আমি কিছু রিসোর্সের বিষয়ে জানাবো। এছাড়া আপনি কোনটি গ্রহণ করবেন এবং কোনটি বর্জন করবেন সেটিও জানাবো।

১. ইউটিউব (YouTube)

আপনি যদি একদম নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনাকে পরামর্শ দেবো ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে ফ্রিল্যান্সিং শেখার যাত্রাটা শুরু করুন।

ইউটিউবে অনেক এক্সপার্ট ও এক্সপেরিয়েন্সড মানুষ আছে যারা ফ্রিতে আপনাকে বিভিন্ন স্কিল শেখাবে। যদিও সব বিষয়ে সাজানো গোছানো টিউটোরিয়াল পাওয়াটা একটি কষ্ট। তবুও আপনি যদি ভালোমতো খোজাখুজি করেন তবে পেয়ে যাবেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে ইউটিউব দেখে শুরু করাটাই উত্তম হবে। কারণ এখানে আপনি একদম ফ্রিতে শিখতে পারবেন। আপনি শেখার সময় বুঝতে পারবেন যে এই কাজটা আপনি উপভোগ করবেন কিনা।

৩. ইউডেমি (Udemy)

পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম হলো Udemy. এখানে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় অসংখ্য বিষয়ে কোর্স রয়েছে। ইংরেজি ভাষায় কোর্সের সংখ্যাই বেশি।

মজার বিষয় হলো এখানকার কোর্সগুলোর মূল্য অনেকটা কম। তাছাড়া অসংখ্য ফ্রি কোর্সও রয়েছে। যদিও ফ্রি কোর্সগুলো অবশ্যই প্রিমিয়াম কোর্সের মতো ওতটা কোয়ালিটিফুল হবে না।

ইউডেমির পেইড কোর্সগুলোতে ইনস্ট্রাকটরের সাপোর্ট, কুইজ, কোর্স শেষে সার্টিফিকেট ইত্যাদির সুযোগ থাকে। ফ্রি কোর্সে সাধারণত এসের সুযোগ থাকে না।

৩. অনলাইন কোর্স

ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য অনেক অনলাইন কোর্স রয়েছে। বাংলাদেশের বেশ কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান সরাসরি ক্লাসের মাধ্যমে কিংবা রেকর্ডেড ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ফ্রিল্যান্সিং শিখিয়ে থাকে।

কোর্সগুলো বেশিরভাগ সময়ই পেইড হয়ে থাকে। মূল্য ৫০০০-৫০০০০ পর্যন্ত হতে পারে। আপনার যদি পর্যাপ্ত টাকা থাকে এবং পেইড কোর্সে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে অনলাইন কোর্স করতে পারেন।

এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠান অফলাইন কোর্সেরও সুযোগ দিয়ে থাকে। এরকম কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হলো বহুব্রীহি, ইশিখন, কোডার ট্রাস্ট, ওস্তাদ, ঘুড়ি লার্নিং ইত্যাদি।

একদম শুরুতেই পেইড কোর্সে ভর্তি না হওয়ারই পরামর্শ দিবো। আগে দেখুন, বুঝুন আপনি আসলেই এই ক্যারিয়ারে সিরিয়াস কিনা। যদি সিরিয়াস হয়ে থাকেন তবে কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।

৪. ব্লগস ও ফোরাম

বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে অসংখ্য ব্লগ সাইট রয়েছে যেখানে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, কন্টেন্ট রাইটিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সহ অসংখ্য ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা বিষয়ক তথ্য ও লেখা পোস্ট করা হয়।

সেসব ব্লগে অনেক রিসোর্স থাকে। আপনি প্র‍্যাক্টিস করে গিয়ে কোথাও আটকে গেলে এসব ব্লগে ঢুঁ মারলে কোনো একটা থেকে সমাধান পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও বেশ কিছু ফোরাম ও ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং বিষয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা, সমস্যার সমাধান, পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনি সেগুলোতে যুক্ত হতে পারেন।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো?

ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট বলতে বুঝায় বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সেলার একাউন্ট তৈরি করা। সারাবিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি মার্কেটপ্লেস হলো Fiverr, Upwork, Freelancer, PeoplePerHour, 99Designs ইত্যাদি।

এসব সাইটে একাউন্ট খুলতে আপনার কয়েকটি জিনিস প্রয়োজন হবে। সেগুলো হলো- একটি ইমেইল অ্যাড্রেস, মোবাইল নাম্বার, ব্যাংক একাউন্ট, ফ্রিল্যান্সিং স্কিল ইত্যাদি।

প্রতিটি সাইটের একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন। তবে এগুলোর মধ্যে কয়েকটি সাধারণ ধাপ রয়েছে। সেগুলো হলো:

  1. একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা,
  2. ভাষাগত দক্ষতা যাচাই করা,
  3. পেশাগত দক্ষতা দাচাই করা,
  4. গিগ, বিড বা অফার তৈরি করা,
  5. জব সার্চ করা ইত্যাদি।

মূলত এই ধাপগুলোই বিভিন্ন সাইটে বিভিন্নভাবে থাকে।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?

সবার ঘরে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার না থাকলেও আমাদের সবার হাতেই একটা ভালো মানের মোবাইল ফোন রয়েছে। প্রথম দিকে ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার কেনা কিংবা পরিবারকে রাজি করানো একটু কষ্টকর।

সেজন্য অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন যে, মোবাইল দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করা যায়? তাদের আশার সংবাদ হলো মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। তবে এখানে সব ধরনের কাজ করার সুযোগটা পাবেন না।

কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলে যতটা স্বাচ্ছন্দের সাথে কাজ করতে পারতেন মোবাইলে সেটা পারবেন না। এছাড়াও মোবাইলেই অবশ্যই আরো অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কি কি কাজ করা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর যদি জানা না থাকে তাহলে চলুন একটা ধারণা দিই। আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন যে, এই ব্লগের অধিকাংশ কন্টেন্ট মোবাইল দিয়ে লেখা।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর যেসব কাজ করা যায়ঃ

  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ফটো এডিটিং
  • ভয়েস ওভার
  • ট্রান্সলেটিং ও প্রুফ রিডিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট

এই কাজগুলো আপনি অনায়াসেই মোবাইল ব্যবহার করে সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে কম্পিউটারে করলে যে সুবিধাগুলো পেতে সেগুলো থেকে বঞ্চিত হবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করব?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনি কয়েকটি স্টেপ অনুসরন করতে পারেন। আপনারা যারা নতুন তারা অনেকেই জানতে চান, ভাইয়া ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করব। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে প্রথমকেই একটা পরিকল্পনা করে ফেলুন। পরিকল্পনা শুধু মস্তিষ্কে থাকলে হবে না, সেটা লিখে ফেলতে হবে।

  • প্রথমেই নির্ধারণ করুন আপনি কোন দক্ষতা অর্জন করতে চান।
  • আপনার কাঙ্ক্ষিত দক্ষতাটি শেখার জন্য আশেপাশে কী কী সুযোগ আছে সেগুলো চিহ্নিত করুন।
  • এরপরে দক্ষতা অর্জনের জন্য সুবিধাজনক পথগুলো বেছে নিন।
  • কাজ শিখুন এবং প্রচুর চর্চা করুন। মনে রাখবেন, আপনি যত বেশি চর্চা করবেন, তত বেশি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন।
  • সর্বশেষ ধাপে উপরে দেখানো পদ্ধতিতে কয়েকটি মার্কেটপ্লেস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট খুলে আপনার প্রথম কাজটি পাওয়ার চেষ্টা করুন।

সর্বশেষ অংশ

আপনি যদি সম্পূর্ণ ব্লগটি পড়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করবো আপনি যে উদ্দেশ্যে এই লেখাটি পড়া শুরু করেছিলেন আপনার সে উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে।

আমরা সঠিক উৎস থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো তার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করেছি আজকের ব্লগে। এ বিষয়ে আরো কোনো জিজ্ঞাসা বা কনফিউশান থাকলে কমেন্টে আমাদেরকে জানাতে পারেন।

Frequently Asked Questions

এত আলোচনার পরেও কিছু বিষয়ে কথা না বললে আপনার মনে প্রশ্ন থেকে যাবে। ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে যেসব প্রশ্ন খুব সচারাচর জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে সেগুলোর কয়েকটির উত্তর দেওয়া চেষ্টা করেছি।

১. ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে করতে হয়?

উত্তরঃ ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্ত-পেশা। নির্দিষ্ট চুক্তির ভিত্তিতে টাকার বিনিময়ে কারো কোনো কাজ করে দেওয়াকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। ইন্টারনেট ও কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করতে হয়।

২. ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে ভালো দক্ষতা কোনটি?

উত্তরঃ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজসমূহ উপরে উল্লেখ করেছি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো কয়েকটি দক্ষতা হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং।

৩. আপওয়ার্ক কি ভালো বেতন দেয়?

উত্তরঃ হ্যাঁ, আপওয়ার্ক অনেক ভালো বেতন দেয়। পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় Freelancing Marketplace এর মধ্যে আপওয়ার্ক অন্যতম। এখান থেকে অনেক বড় বড় কাজ পাওয়া যায়।

৪. মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়?

উত্তরঃ হ্যাঁ। তবে আপনি সমস্ত কাজ মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন না কিংবা পারলেও তা ভীষণ ঝামেলাপূর্ণ হবে। মোবাইল দিয়ে কন্টেন্ট রাইটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এসব ছোট-খাটো কাজ করতে পারবেন।

৫. সারা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং এর কত ডলারের বাজার রয়েছে?

উত্তরঃ সারা বিশ্বে ৪.৫৩ বিলিয়ন ডলারের ফ্রিল্যান্সিং বাজার রয়েছে। এটি ২০২২ সালের তথ্য। বর্তমানে এই বাজার আরও অনেক বড়।

৬. ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে?

উত্তরঃ এই প্রশ্নের কোনো সঠিক জবাব নেই। কেউ কেউ বিনা পয়সায় ফ্রিল্যান্সিং শিখে এখন হাজার হাজার টাকা আয় করছে। আবার কেউ কেউ হাজার হাজার টাকা খরচ করে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করেও ১ পয়সা আয় করতে পারছে না।

৭. ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কত?

উত্তরঃ ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম। তবে কিছু কিছু গবেষণা বলছে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

৮. নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি?

উত্তরঃ সারাবিশ্ব জুড়ে অসংখ্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বা জব সাইট রয়েছে। এগুলো মধ্যে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস হলো Fiverr, Upwork, PeoplePerHour, Guru ইত্যাদি।

Related Posts

সঙ্গে থাকুন ➥