চাকরিপ্রার্থীদের মানসিক দুশ্চিন্তা কমাতে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময় বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। সেই ধারাবাহিকতা ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিও আগামী ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হবে। তবে এই বিসিএসের মাধ্যমে কত প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এদিকে যথাসময়ে বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিসিএস প্রত্যাশীরা। তারা বলছেন, আগে কবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হত। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হত। তবে গত কয়েক বছর ধরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নিয়ে কোনো উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা কাজ করে না। নির্দিষ্ট সময় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় প্রস্তুতিতেও সহায়তা হয়।
যথা সময়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, দ্রুত পরীক্ষার ফল প্রকাশ থেকে শুরু করে শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সব কাজ সম্পন্ন হওয়ায় চাকরিপ্রার্থীদের কাছে আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে পিএসসি।
আগে একটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করতে প্রায় চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগত। তবে সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এখন একটি বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশে দুই থেকে ৩ বছর সময় লাগে। ধীরে ধীরে সেটিও কমে আসছে। যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য স্বস্তির।
নিয়োগ হচ্ছে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়
বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে বেশ কিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন। এর মধ্যে পাশাপাশি বসা বন্ধ করা, পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের কথা বলা বন্ধ করা অন্যতম। এছাড়া মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে জেলা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জিজ্ঞেস করাও বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত মেধাবীদের চাকরি পাওয়ার হার বেড়েছে।
জানা গেছে, কিছু চাকরিপ্রার্থী প্রিলিমিনারির আবেদনের পর গভীর রাতে একই সঙ্গে টাকা জমা দিতেন। এতে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাশাপাশি হতো। ফলে দেখা যেতো প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় তাঁদের সিট একই রুমে পড়তো। এই সুযোগে চাকরিপ্রার্থীরা দেখাদেখি বা কথা বলে বিশেষ সুবিধা নিতে পারতেন। এই অবস্থার অবসান ঘটানো হয়েছে। বর্তমানে যেভাবেই আবেদন করা হোক কিংবা আবেদন ফি জমা দেওয়া হোক পাশাপাশি সিট পড়ার কোনো সুযোগ নেই।
পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীরা যেন একে অন্যের সাথে কথা বলতে না পারে সেই ব্যবস্থাও করেছে পিএসসি। এমনকি কারো সাথে কথা বলার সুযোগও বন্ধ করা হয়েছে। এজন্য পরীক্ষার হলে দায়িত্বরতদের বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে পিএসসি।
বিসিএসে জেলাপ্রীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তাঁর ধর্ম কী, কোন জেলায় তাঁর বাড়ি—এমন প্রশ্ন করা বন্ধ করেছে পিএসসি। এমনকি যেসব প্রশ্নে প্রার্থীর প্রতি কোনো সদস্যের ইতিবাচক বা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয় কিংবা ব্যক্তিগত কোনো প্রশ্নের উত্তরে তাঁর প্রতি প্রভাব বিস্তার করে—এমন প্রশ্নও করার সুযোগও বন্ধ করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।