বাংলাদেশের মাদ্রাসায় এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালু হচ্ছে

Avatar

Published on:

বাংলাদেশের মাদ্রাসায় এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালু হচ্ছে

মাদ্রাসায় এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উচ্চশিক্ষার নতুন যুগ

ইসলাম ধর্মভিত্তিক কয়েক হাজার উচ্চশিক্ষালয়ের তদারক প্রতিষ্ঠান ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (IAU) সম্প্রতি এমফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ১৪তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার প্রবিধান প্রণয়ন করেছে। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদ সম্প্রতি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার নতুন সুযোগ

নতুন প্রবিধানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষালয়ের শিক্ষক ও গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখন থেকে এমফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। গবেষণা মূল্যায়ন ও যাচাই-বাছাই শেষে আইএইউ এই ডিগ্রি প্রদান করবে।

গবেষণার বিষয়বস্তু

প্রবিধানে গবেষণার বিষয়বস্তু হিসেবে আল-কুরআন, তাফসীর, হাদিস, ফিকহ, সিরাত, ইতিহাস, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামি রাষ্ট্রনীতি, আকাঈদ, তাসাউফ, ইসলামি দর্শন, এবং ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, সমসাময়িক জীবন সমস্যার অনুসন্ধান এবং উত্তরণের উপায় উন্মোচন নিয়েও গবেষণা করা যাবে।

দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা

গবেষণার মধ্যে বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, এবং দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করার লক্ষ্যে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি-কালচার বিষয়েও গবেষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়াও, মুসলিম শাসনামলের আইন ও বিচার, সমাজনীতি, অর্থনীতি, এবং রাষ্ট্রনীতি নিয়ে গবেষণার সুযোগও প্রদান করা হয়েছে।

সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রবাদের বিরুদ্ধে গবেষণা

গবেষণার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, এবং উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করা। আরবি ভাষা ও সাহিত্যসহ বিভিন্ন ভাষার ইসলামি সাহিত্যের পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন এবং মানবিক মূল্যবোধ বিস্তারের মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা গঠনের জন্য গবেষণা করাও সম্ভব হবে।

উপসংহার

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদ বলেন, "আমরা সময়োপযোগী এবং বাস্তবমুখী গবেষণাকর্মের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নতি করতে চাই।" এই প্রবিধানের মাধ্যমে মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষার মান ও গবেষণা উন্নত হবে এবং শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে বলে তিনি আশাবাদী।

এটি মাদ্রাসায় এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালুর একটি নতুন যুগের সূচনা, যা দেশের ইসলামিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে যাচ্ছে।

Related Posts

সঙ্গে থাকুন ➥